বৃহস্পতিবার, ৩১ অক্টোবর ২০২৪, ০৭:২৮ পূর্বাহ্ন
অনলাইন ডেক্স ঃ
বরিশালের কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল এলাকায় কোটা আন্দোলনকারীদের সঙ্গে পুলিশের ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া ঘটনা ঘটেছে। এই সময় ছাত্রদের নিক্ষিপ্ত ইটের আঘাতে গুরুতরভাবে আহত হয়েছেন মহানগরের উপ-পুলিশ কমিশনার আলী আশরাফ ভুঞা।
এছাড়াও আন্দোলনকারীদের মারধরে ও নিক্ষিপ্ত ইটে আরো দুই সাংবাদিক আহত হয়েছেন। বুধবার বেলা ১১ থেকে বরিশাল নগরীর হাতেম আলী কলেজ চৌমাথা, নথুল্লাবাদ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে শুরু হওয়া শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ এবং পুলিশের সঙ্গে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া, অগ্নিসংযোগ, টিয়ারসেল ও সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপের ঘটনা এখনো চলছে।
বরিশাল মহানগর পুলিশ কমিশনার জিহাদুল কবির সাংবাদিকদেন বলেন, নগরীর নথুল্লাবাদ বাস টার্মিনালের সামনে সড়কে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ঘটনা ঘটে। এ সময় শিক্ষার্থীদের নিক্ষিপ্ত ইট এসে উপ-পুলিশ কমিশনার (দক্ষিণ) আলী আশরাফ ভুঞার মুখের উপর আঘাত করে। এতে গুরুতর আহত হয়েছেন তিনি। বর্তমানে বরিশালে তার চিকিৎসা চলছে।
তিনি আরো জানান, শিক্ষার্থীদের হামলায় তাদের আরো অন্তত ৭/৮ জন পুলিশ সদস্য আহত হয়েছে। প্রত্যক্ষদর্শী জানান, বেলা ১১টায় বরিশাল নগরীর সরকারী সৈয়দ হাতেম আলী কলেজের সামনে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ শুরু করে। এছাড়াও একই সময়ে নগরীর নথুল্লাবাদ কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনালের সামনে অবস্থান নেয় সরকারি বিএম কলেজসহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা।
জানান, পৌনে একটার দিকে শিক্ষার্থীরা হাতেম আলী কলেজ চৌমাথা এলাকায় একটি মোটর সাইকেলে অগ্নিসংযোগ করে। তখন পুলিশ এসে টিয়ারসেল ও সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ শুরু করে।
এ সময় পুলিশ ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এ খবর নগরীর নথুল্লাবাদ এলাকায় পৌঁছুলে সেখানের আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা ক্ষিপ্ত হয়ে উঠে। বেলা পৌনে দুইটার পর থেকে সেখানে পুলিশের সঙ্গে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে।
নথুল্লাবাদ এলাকায় এক প্রত্যক্ষদর্শী জানায়, পুলিশ শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে করে টিয়ার সেল, সাউন্ড গ্রেনেড ও রাবার বুলেট ছোড়ে। শিক্ষার্থীরা পুলিশকে উদ্দেশ্যে করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে।
এ সময় লুঙ্গি পরিহিত একদল অজ্ঞাত পরিচয়ের যুবকেরা শিক্ষার্থীদের উপরে হামলা করে। তখন শিক্ষার্থীরা হানিফ পরিবহনের একটি বাস ভাংচুর করে।
এই সময় বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থীও আহত হয়েছেন। শিক্ষার্থীদের নিক্ষিপ্ত ইটের আঘাতে আহত হয়েছেন দৈনিক যুগান্তর পত্রিকার ফটো সাংবাদিক শামীম আহমেদ। তাছাড়া শিক্ষার্থীরা পিটিয়ে আহত করেছে ডিবিসি নিউজের মাল্টিমিডিয়ার প্রতিনিধি ওমর ফারুক ও তার ক্যামেরা পার্সনকে।
এখন পর্যন্ত কী পরিমাণ টিয়ারসেল, রাবার বুলেট ও সাউন্ড গ্রেনেডের ব্যবহার করা হয়েছে সেই বিষয়ে কোন তথ্য দিতে পারেনি মহানগর পুলিশ। রাত ৮টা নাগাদ এই রিপোর্ট লেখার সময় পর্যন্ত ছাত্রদের ইট-পাটকেলের জবাবে পুলিশ থেমে থেমে রাবার বুলেট ও টিয়াসেল ছুড়ে যাচ্ছিল। অপরদিকে বিকেল চারটার পর থেকে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বরিশাল-কুয়াকাটা ও বরিশাল-ভোলা মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করছে।
বন্দর থানার ওসি আব্দুর রহমান মুকুল জানান, শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ করছে। পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। এদিকে বেলা ১১টা থেকে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা পর্যন্ত বরিশালের সঙ্গে সড়ক পথে সকল জেলার যানবাহন চলাচল বন্ধ ছিল বলে এয়ারপোর্ট থানার ওসি এসএম মাকসুদ আলম জানিয়েছেন।